কয়েক বছর থেকে খুলনা জেলার কয়রায় তরমুজ চাষ শুরু হয়েছে। প্রথমে দু-একজন কৃষক তরমুজ চাষ করে ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় এবার উপজেলার আমাদি ও বাগালি ইউনিয়নে ৫ গুণ বেড়েছে তরমুজ চাষ।
কৃষকরা স্বপ্ন দেখছেন লাভবান হবেন তবে দুর্যোগ প্রবণ এ উপকূলে গত কয়েক মাস অনাবৃষ্টি ও স্থানীয় পানির উৎস খালগুলো শুকিয়ে যাওয়ায় খরতার প্রভাব পড়ছে তরমুজের উপর। অনাবৃষ্টির আকাশ থেকে ঝরছে খরতার তাপ। কৃষকের স্বপ্ন যেন দুঃস্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আরও পড়ুন:ঘেরের পানির ওপর মাচায় ঝুলছে রসালো তরমুজ
পানির অভাবে গাছগুলো শুকিয়ে যাওয়ায় ফল নষ্ট হচ্ছে। দূরের ডিপ থেকে পানি কিনে টেনে এনে কোন রকমে বাঁচিয়ে রেখেছে গাছগুলো, তবুও অনেকের কপালে জুটছে না পানি।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, গত বছর ১৫০ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ করে কৃষকরা দাম ও ফলন ভালো পাওয়ায় এ বছর কৃষকরা উদ্বুদ্ধ হয়ে ৬৫০ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ করেছেন।
আরও পড়ুন: অসময়ে তরমুজ চাষে ভাগ্যবদল রূপসার ২০ চাষির
আমাদি ইউনিয়নের হরিকাটি গ্রামের শিপালী সরদার বলেন, গত বছর এলাকায় তরমুজের ফলন ভালো দেখে অন্যের কাছ থেকে বিঘা প্রতি ২ হাজার টাকা করে ২ বিঘা জমি লিজ নিয়ে এবার প্রথম তরমুজ চাষ করেছেন। তবে পানির চরম সমস্যায় ভালো ফলন পাওয়া নিয়ে চিন্তিত রয়েছেন।
তিনি বলেন, খালে পানি না থাকায় ডিপ থেকে পানি কিনে আনতে অতিরিক্ত খরচ বেড়ে যাচ্ছে।
একই গ্রামের চন্দ্র শেখর মন্ডল এবার প্রথম ৯ বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ করেছেন। তার এ পর্যন্ত ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তবে পানির সমস্যার কারণে আসল টাকা উঠবে কিনা সংশয়ে রয়েছেন।
এলাকার গুরুত্বপূর্ণ অর্থকারী ফসল চাষাবাদে কৃষি অফিসের উল্লেখযোগ্য কোন ভূমিকা দেখা মেলেনি বলেও অভিযোগ রয়েছে।
জমির ভিতরে থাকা খালগুলো খননের মাধ্যমে ও স্যালো বসানোর মাধ্যমে পানির সমস্যা সমাধান করতে পারলে তরমুজ চাষ একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থকারী ফসল হবে বলে সচেতন মহল জানান।
আরও পড়ুন: খুলনায় লবণাক্ত এলাকায় তরমুজের বাম্পার ফলন
পাইকগাছা কৃষি অফিসার কয়রা উপজেলায় অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত এস এম জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পানির সমস্যার নিরসনের জন্য খালগুলো খনন করে কৃষকের কাছে যাতে ইজারা দেয়া হয় সেজন্য জেলা সমন্বয় কমিটিতে আলোচনা করা হবে। পানি সমস্যার কারণে গাছগুলোতে একটা ভাইরাস দেখা দিয়েছে, তার জন্য পরামর্শ দেয়া হচ্ছে, তবে বৃষ্টি না হলে রোগ পুরোপুরি নিরাময় হবে না।